
সর্বভারতীয় ডাক্তারি ও ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের প্রবেশিকা ‘নিট’ এবং ‘জেইই’ (মেন)-সহ অন্যান্য প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষা আয়োজনকে কেন্দ্র করে বিরোধী দলগুলি এক হয়ে বৈঠক করার সিদ্ধান্ত নিল। বিশেষত মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং সনিয়া গান্ধীর ডাকে এই বৈঠক হচ্ছে।
জানা গিয়েছে মমতা তো বটেই, ওই বৈঠকে পাঞ্জাব, ছত্তীসগড়, পুদুচেরির মতো একাধিক কংগ্রেস শাসিত রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী দুপুর আড়াইটের সময় অনুষ্ঠিত হতে চলা এই বৈঠকে যোগ দেবেন। তবে ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেন এবং কেরালার মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন কী করতে চলেছেন তা আজ সকাল পর্যন্ত জানা যায়নি। করোনার পরিস্থিতিতে দুটি সর্বভারতীয় পরীক্ষা হলে ছাত্র-ছাত্রীদের জীবন ঝুঁকির মুখে পড়ে যাবে৷ তাই পরীক্ষাগুলি স্থগিত করা হোক, ইতিমধ্যেই এই দাবিতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে দুটি চিঠি দিয়েছেন মমতা৷ মমতার কথায়, ‘সব অ-বিজেপি শাসিত রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীদের বৈঠকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে৷ কিন্তু গতকাল মঙ্গলবার প্রেস বিবৃতি জারি করে ন্যাশনাল টেস্টিং এজেন্সি তথা এনটিএ জানিয়ে দেয়, সেপ্টেম্বরেই হবে পরীক্ষা। আর স্থগিত করার কোনও অবকাশ নেই। এনটিএ জানিয়েছে, পূর্ব ঘোষণা মতো ১-৬ সেপ্টেম্বর হবে ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের প্রবেশিকা পরীক্ষা। এবং ১৩ সেপ্টেম্বর হবে ডাক্তারির প্রবেশিকা পরীক্ষা।
শুধুমাত্র NEET ও JEE পরীক্ষা স্থগিতই ইস্যু নয় বৈঠকের৷ দেশের যুক্তরাষ্ট্র কাঠামোকে অক্ষুণ্ণ রাখাকেও অ্যাজেন্ডা রাখা হয়েছে বৈঠকে৷ সংসদে বর্ষাকালীন অধিবেশন শুরুর আগে বিরোধীদের এই বৈঠক অত্যন্ত তাত্পর্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে। একটা বিষয়কে ইস্যু করে সকলে মিলিতভাবে বিরোধিতা করে কেন্দীয় সরকারকে বার্তা দিতে চাইছে বিরোধী দলগুলি। মমতার মতে সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার জন্য শীর্ষ আদালতের কাছে আবেদন জানাক কেন্দ্র। না হলে আদালতের পরামর্শে এমন ব্যবস্থা করা হোক, যাতে ছাত্রছাত্রীদের স্বাস্থ্য এবং কেরিয়ার – কোনওটাই বিপন্ন না হয়। এদিকে কেন্দ্রের তরফে মানবসম্পদ উন্নয়নমন্ত্রী রমেশ পোখরিয়াল নিশঙ্ক জানিয়েছেন, পড়ুয়া ও অভিভাবকদের চাপেই এই পরীক্ষা গ্রহণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
এই বিষয়ে অভিনেতা সোনু সুদ পাশে দাঁড়িয়েছেন ছাত্রছাত্রীদের। তাঁর যুক্তি, ছাত্রছাত্রীদের জোর করে পরীক্ষা দিতে যেতে বাধ্য করাটা ঠিক না। সোনু বলছেন, ‘অধিকাংশ ছাত্রছাত্রীই বিহারের। যেখানে ১৩-১৪টা জেলা বন্যায় খুব খারাপভাবে ক্ষতিগ্রস্ত। সেখানকার ছাত্রছাত্রীরা পরীক্ষা দিতে যাবে, এটা আশা করবেন কী ভাবে? কোথায় গিয়ে যে থাকবেন সেই টাকা তাঁদের কাছে নেই। এই ছাত্রছাত্রীদের বাড়ি থেকে জোর করে বের করে এনে আমরা পরীক্ষা দিতে পাঠাতে পারি না।’ ছাত্রছাত্রী ও অভিভাবকদের আরও ২ থেকে ৩ মাস সময় দেওয়া উচিত বলে মত তাঁর। সোনু বলেছেন, ‘আমিও একজন ইঞ্জিনিয়ার। দেশের যে যুব সম্প্রদায় আগামী দিনে বিভিন্ন দফতরের দায়িত্ব নিতে চলেছেন, তাঁদের বেড়ে ওঠার সুযোগ করে দিক দেশ।’ অপরদিকে সম্প্রতি গ্রেটা থুনবার্গ- ও এই পরীক্ষা পিছোনোর সওয়াল করে আর্জি জানিয়েছেন।