
ক্যালিফোর্নিয়া নিবাসী প্রৌঢ়া লরিন উইলিনবার্গ এখন বিশ্বজুড়ে আলোচিত নাম। এইচআইভি এইডস থেকে কোনও ওষুধ না খেয়ে সম্পূর্ণ আরোগ্য লাভ করেছেন তিনি। তাঁর শরীরই হাল না ছেড়ে গত তিনদশক ধরে তিলে তিলে খতম করেছে এই মারণ ভাইরাসকে। এমনই এক চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এসেছে নেচার পত্রিকায় সাম্প্রতিক প্রকাশিত এক গবেষণায়।
লরিন উইলিনবার্গের বোন ম্যারো প্রতিস্থাপন হয়নি, গত তিন দশকে খাননি কোনও ওষুধ। ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের এইডস বিশেষজ্ঞ স্টিভ ডিকসের কথায়, “এখান থেকে বোঝা যাচ্ছে এইডসের বিষয়ে বহু মিথ চালু রয়েছে। অ্যান্টিরেট্রোভাইরাল থেরাপিতেও একজন সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে উঠতে পারেন।পাশাপাশি এও বোঝা যাচ্ছে ইমিউন সিস্টেম সক্রিয় থাকলে এইডস তাড়ানো সম্ভব।” অ্যান্টিরেট্রোভাইরাল থেরাপির পরে নতুন করে সংক্রমিত হননি এমন ব্যক্তিরও সন্ধান পেয়েছেন গবেষকরা। ফলে এই ঘটনাক্রমে এক নতুন সম্ভাবনার দরজা খুলছে বলে মনে করছেন গবেষকরা। পাশাপাশি ক্যালিফোর্নিয়া নিবাসী আরও দুই ব্যক্তির সন্ধান দিচ্ছে এই গবেষণা। তাঁরা টিমোথি ব্রাউন এবং অ্যাডাম কাস্তিল্লেজো। তাঁরাও এইডস থেকে আরোগ্য লাভ করেছেন। তাঁদের ক্ষেত্রে ক্যান্সার চিকিৎসার জন্য বোন ম্যারো ট্রান্সপ্ল্যান্ট করা হয়েছিল। কিন্তু লরিন উইলিনবার্গের ক্ষেত্রে কিছুই করতে হয়নি। গবেষকদের দল আরও ৬৩ জনকে চিহ্নিত করেছেন যাঁরা এইচআইভিকে নিয়ন্ত্রণে রেখেছেন যাতে তা না ছড়াতে পারে। গবেষকরা মনে করছেন, লারিন সেই বিরলতম একজন মানুষ যার শরীর রকম ওষুধ ছাড়াই এইচআইভি ভাইরাসকে আটকাতে পারে। জিন বিশ্লেষণ করে দেখা গিয়েছে, নতুন কোনও কোষে সমক্রমণ ছড়ানো বন্ধ করতে ভাইরাসটিকে লক করে রেখেছে লারিনের শরীর।
এই গবেষণায় যে তথ্য উঠে এসেছে তা নিঃসন্দেহে একটি নতুন যুগের সন্ধান দিতে চলেছে বললে অত্যুক্তি হবেনা। কারণ এইডস এমন একটি রোগে পরিণত হয়েছে বর্তমানে যে, মানুষ এই রোগটি হলে অবধারিত মৃত্যু ভেবেই বসেন। এছাড়াও রয়েছে সামাজিক বয়কটের একটা বিষয়। এখনও এই রোগ প্রকাশ্যে আনতে বহু মানুষ বিরত থাকেন। গবেষণাটির ফলে মানুষের মনে ধীরে ধীরে রোগটি স্বাভাবিক একটি রোগ হিসেবে বিবেচিত হবে এমনটা আশা করা যায়।