অধ্যক্ষ এবং অধ্যাপকের পদ থেকে পদত্যাগ করলেন আর জি কর মেডিকেল কলেজের প্রিন্সিপাল
কলকাতা, ১২ অগাস্ট, ২০২৪: আরজি করের অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষ সাংবাদিক সম্মেলন করে বললেন, 'আর অপমানিত হতে পারছি না।' তাই পদত্যাগ। অধ্যক্ষ পদ এবং অধ্যাপক পদ থেকেও ইস্তফা দিলেন সন্দীপ ঘোষ। জানালেন, তিনি রাজ্য সরকারি চাকরি ছেড়ে দিয়েছেন। তিনি আরও বলেন, 'কেউ বাধ্য করেননি, স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করছি।'
আজ সাংবাদিদের সন্দীপ বলেন, 'আমার ইস্তফাই ছাত্রছাত্রীজদের কাম্য ছিল। আশা করব, এ বার ছাত্রছাত্রী, জুনিয়র চিকিৎসকেরা কাজে ফিরবেন। গত কয়েক দিনে বিভিন্ন মাধ্যমে আমি যে কটূক্তি সহ্য করেছি, আমার পরিবার, সন্তানেরা যা সহ্য করেছে, তাতে বাবা হিসেবে আমি লজ্জিত। তাই আমি পদত্যাগ করলাম। আশা করি আপানা ভালো থাকবেন'। সেই সঙ্গে হাসপাতালে কয়েক জন অধ্যাপকের বিরুদ্ধে অভিযোগের ইঙ্গিত দিয়েছেন সন্দীপ। দাবি, তিনি স্পষ্টবক্তা বলেই তাঁর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। তাঁর কথায় রাজনীতির রং লাগানো হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেছেন আরজি করের প্রাক্তন অধ্যক্ষ। তিনি বলেন, 'চিকিৎসকদের মধ্যেও অনেক চোর ডাকাত রয়েছে। ভবিষ্যতে হয়তো জানতে পারবেন। আমি মাথা উঁচু করে বাঁচতে চাই। আমি চাই সত্যি উদঘাটন হোক। দোষীরা শাস্তি পাক।’ তাঁর পদত্যাগের পর আন্দোলনকারীরা লিখিত ক্ষমা দাবি করছেন। তবে নিজের প্রতিষ্ঠানে এত বড় ঘটনা ঘটে যাওয়ার পর দায় ঝেড়ে ফেলে মেয়েটির 'রাতে একা সেমিনার হলে থাকা উচিত হয়নি'- এমন মন্তব্য করেন কি করে একজন প্রাতিষ্ঠানিক প্রধান, সেই প্রশ্ন কিন্তু অবশ্যই থেকে যায়।
ইতিমধ্যেই আরজি কর হাসপাতালের সুপারকে সরানোর নির্দেশ দিয়েছে রাজ্যের স্বাস্থ্য দপ্তর। এই দায়িত্বে ছিলেন সঞ্জয় বশিষ্ঠ। তাঁর জায়গায় হাসপাতালের নতুন সুপার হচ্ছেন চিকিৎসক বুলবুল মুখোপাধ্যয়। তিনি আগে হাসপাতালের ডিন ছিলেন। পুলিশের তরফ থেকেও এসিপি নর্থ চন্দন গুহকে অপসারণ করা হয়। প্রসঙ্গত, প্রাথমিক ভাবে পুলিশের তরফ থেকে নাকি মৃত চিকিৎসকের বাড়িতে জানানো হয়েছিল, তাঁদের মেয়ে আত্মহত্য করেছে। এই আবহে পুলিশের ভূমিকা নিয়ে উঠেছিল।
এ দিন চার জন চিকিৎসককে লালবাজারে তলব করা হয়েছে। সূত্রের খবর, তাঁদের সকাল ১১টার পর দেখা করতে বলা হয়েছে। ঘটনার দিন 'নাইট ডিউটি'-তে ছিলেন তাঁরা। এই চার চিকিৎসকের মধ্যে একজন ইন্টার্ন, একজন হাউস স্টাফ, দুই জন পোস্ট গ্র্যাজুয়েশনের পড়ুয়া। ঘটনার দিন তাঁরা সঙ্গে সেমিনার হলে বসে নৈশভোজ সেরেছিলেন ওই মহিলা চিকিৎসকের সঙ্গে।
এদিকে আগামী রবিবারের মধ্যে পুলিশ তদন্ত সম্পন্ন না করতে পারলে সিবিআইকে তদন্ত হস্তান্তর করা হলে বলে আজ জানিয়ে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সোদপুরে সেই নির্যাতিতার বাড়িতে যান। সেখানে তিনি মৃত চিকিৎসকের পরিবার সদস্যদের সঙ্গে কথা বলছেন। এর আগে মৃত চিকিৎসকের পরিবারের সঙ্গে ফোনে কথা বলে স্বচ্ছ তদন্তের আশ্বাস দিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
Kommentare