আগামীকাল পূর্ণ রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংয়ের শেষকৃত্য সম্পন্ন হবে
- The Conveyor
- Dec 27, 2024
- 2 min read

২৭ ডিসেম্বর, ২০২৪: বৃহস্পতিবার রাতে দিল্লি এইমসে প্রয়াত হয়েছেন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং। আজ সকালে দিল্লিতে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংয়ের বাসভবনে গিয়ে তাঁর প্রতি শেষ শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করলেন নরেন্দ্র মোদী। শুক্রবার তাঁর দেহ রাখা হয়েছে তাঁর বাসভবনে। সকালেই সেখানে শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করতে হাজির হন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, কংগ্রেস নেত্রী সনিয়া গান্ধি, কংগ্রেস সাংসদ রাহুল গান্ধি, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডা সহ রাজধানীর প্রায় সব রাজনীতিকই। ৭ দিনের রাষ্ট্রীয় শোকপালনের ঘোষণা করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। অর্থাৎ ২৬ ডিসেম্বর থেকে ১ জানুয়ারি পর্যন্ত রাষ্ট্রীয় শোক পালন করা হবে।
কংগ্রেস সূত্রে জানা গিয়েছে, পূর্ণ রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর শেষকৃত্য হবে শনিবার। মনমোহনের কনিষ্ঠা কন্যা ক্যালিফর্নিয়ায় অধ্যাপনা করেন। সেখান থেকে তিনি শুক্রবার বিকেলে দেশে ফিরবেন। সেই কারণেই শেষকৃত্য হবে শনিবার। শেষকৃত্যের পর মনমোহনের অস্থি নিয়ে যাওয়া হবে কংগ্রেসের সদর দফতরে। সেখানে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে পারবেন সাধারণ মানুষ।
অবিভক্ত পঞ্জাবের প্রত্যন্ত এক গ্রাম থেকে মনমোহনের জীবনের যাত্রা শুরু। দেশভাগের পর পরিবারের সঙ্গে শরণার্থী হয়ে চলে আসেন ভারতে। কৃতী ছাত্র, নামী শিক্ষক, উচ্চপদে নানা চাকরি থেকে শুরু করে দেশের সর্বোচ্চ প্রশাসনিক পদ- সব মিলিয়ে মনমোহনের জীবন এক চমকপ্রদ উত্থানের কাহিনি। সামলেছেন রিজার্ভ ব্যাঙ্কের গভর্নর, যোজনা কমিশনের ডেপুটি চেয়ারম্যান, রাজ্যসভায় বিরোধী দলনেতার পদও। তবে মনমোহন সিংহ নামটা দেশ তথা বিশ্বের সামনে সজোরে এসে পড়ে ১৯৯১ সালে, তিনি দেশের অর্থমন্ত্রী হওয়ার পর। পাঁচ বছর অর্থমন্ত্রী থাকাকালীন তুমুল বিতর্কের কেন্দ্রে ছিলেন তিনি। এক দিকে প্রবল নিন্দা আর প্রতিবাদ, অন্য দিকে দু’হাত তুলে প্রশংসা আর সমর্থন। রাওয়ের জমানায় অর্থমন্ত্রী হিসাবে দেশের আর্থিক সংস্কার কর্মসূচির সঙ্গে মিশে গিয়েছিল মনমোহনের নাম। সরকারি নিয়ন্ত্রণ সরিয়ে বেসরকারি পুঁজি, ক্ষেত্রবিশেষে বিদেশি পুঁজিকেও জায়গা করে দিয়েছিলেন তিনি। আর্থিক সংস্কারের পাশাপাশি গরিব জনগোষ্ঠীর সামাজিক সুরক্ষা সুনিশ্চিত করার বিষয়টিকেও মনমোহন নতুন উচ্চতায় নিয়ে গিয়েছিলেন। ১০০ দিনের কাজের প্রকল্প তাঁর সরকারেরই অবদান।
ভারতের ইতিহাসে মনমোহনই একমাত্র প্রধানমন্ত্রী, যিনি আগে নিজের অবসরের কথা ঘোষণা করেছিলেন। ২০১৪-র লোকসভা নির্বাচনের পাঁচ মাস আগে জানিয়ে দিয়েছিলেন, ভোটের ফলাফল যা-ই হোক না কেন, তিনি আর প্রধানমন্ত্রী পদে থাকবেন না। তাঁর জমানায় অভিযোগ ওঠা একাধিক কেলেঙ্কারির মধ্যেও মনমোহনের ব্যক্তিগত সততা ও নিষ্ঠা নিয়ে কোনও দিন প্রশ্ন তোলার সুযোগ পায়নি বিরোধীরা।
Comments