top of page

আরজি কর কান্ডে অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনা দায়েরের সময় নিয়ে চরম বিভ্রান্তি

আমার ৩০ বছরের জীবনে এমন কেস ডায়েরি দেখিনি- মন্তব্য প্রধান বিচারপতির





২২ অগাস্ট, ২০২৪: আরজি কর কান্ডে যথেষ্ট খটকা রয়েছে, এমনই মনে করছে সুপ্রিম কোর্ট। এদিন আদালতে স্টেটাস রিপোর্ট জমা দেয় সিবিআই৷ রাজ্য এবং সিবিআই উভয়ের তরফেই স্টেটাস রিপোর্ট জমা দেওয়া হয় এদিন৷ অভিযুক্তের মেডিক্যাল রিপোর্টও দেখতে চান সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়।

আরজি কর কান্ডে কখন দায়ের হয়েছে অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা, পুলিশের কাছেই তার সদুত্তর নেই। গত ৯ অগস্ট ভোরে চিকিৎসক খুনের ঘটনাটি প্রকাশ্যে আসার পর থেকে ওই দিন রাতে ঘটনাস্থল সিল করা পর্যন্ত যে ঘটনাপরম্পরা আদালতে পেশ করা হয়েছে, তাতেই শীর্ষ আদালতের খটকা বেড়েছে। রাজ্যের তরফ থেকে দাবি করা হয়, আরজি করে চিকিৎসক ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু হয়েছিল ১টা ৪৫ মিনিটে। কিন্তু কেস ডায়েরি তুলে ধরে প্রধান বিচারপতি বলেন, 'অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা তো রুজু হয়েছে রাত সাড়ে ১১টায়।' সলিসিটর জেনারেল জানান, চিকিৎসক ছাত্রীর দেহ পুড়িয়ে ফেলার পরে মামলা রুজু করা হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে এই খুনের ঘটনায় অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনা দায়েরের সময় নিয়ে চরম বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছে।

বৃহস্পতিবার তদন্ত রিপোর্ট জমা দিয়ে সিবিআই আদালতকে বলে, ‘‘ঘটনার পাঁচ দিন পরে তদন্ত করতে নেমেছে তারা। তবে তত দিনে সব কিছু বদলে গিয়েছে।’’ সলিসিটার জেনারেল তুষার মেহতা এদিন সুপ্রিম কোর্টে অভিযোগ তোলেন, দুর্ঘটনাস্থল ‘অল্টার্ড’ অবস্থায় মিলেছে৷ যদিও রাজ্য সিবিআইয়ের দাবিকে নস্যাৎ করে বলে, তাদের কাছে ঘটনার সম্পূর্ণ ‘টাইমলাইন’ রয়েছে। রয়েছে ‘ভিডিয়োগ্রাফি’ও। কিছুই বদলে যায়নি। সলিসিটর জেনারেল জানান, ময়নাতদন্তের ভিডিওগ্রাফি করা হলেও ঘটনাস্থলের কোনও ভিডিওগ্রাফি করা হয়নি৷ চিকিৎসকদের তরফে আইনজীবী জানান, ছাত্রছাত্রীদের তরফে চাপ দেওয়ার পরে ময়নাতদন্তের ভিডিওগ্রাফি করা হয়৷ এর আগে মৃত চিকিৎসকের সহকর্মী এবং সিনিয়ররা গোটা প্রক্রিয়ার ভিডিয়োগ্রাফির দাবি জানিয়েছিলেন। তারা নিশ্চয় মনে করেছিলেন যে কিছু একটা লুকোনো হবে। কিন্তু তা করা হয়নি, শুধু ময়নাতদন্তের ভিডিওগ্রাফি হয়েছে।

রাজ্য সরকার জানায়, আরজি করের চিকিৎসকের ময়নাতদন্ত হয়েছিল সন্ধ্যা ৬টা ১০ মিনিট থেকে ৭টা ১০ মিনিটের মধ্যে। উদ্বেগ প্রকাশ করে প্রধান বিচারপতি বলেন, জিডি (জেনারেল ডায়েরি) এন্ট্রি হয়েছিল সকাল ১০টা ১০মিনিটে। তারপর রাত ১১টা ৪৫শের পর ক্রাইম সিন সিল করা হল?’’ বিচারপতি পাদ্রিওয়ালা বলেন, 'এটা তো খুবই আশ্চর্যজনক, ময়নাতদন্তের আগে ইউডি রেজিস্ট্রেশন হয়ে গেল!' সুপ্রিম কোর্ট প্রশ্ন করে, 'ময়নাতদন্তের পরও কি পুলিশ জানত না যে এটা অস্বাভাবিক মৃত্যু? তাহলে রাত ১১টা ৪৫ মিনিটে কীভাবে এফআইআর রুজু করা হয়?' সলিসিটার জেনারেল তুষার মেহতাও আদালতকে জানিয়েছিলেন, আগে জিডি রেজিস্টার্ড হয়েছিল। রাত ১১টা ৩০শে ইউডি কেস রেজিস্টার্ড হয়। রাত ১১টা ৪৫শে এফআইআর রেজিস্টার্ড হয়। প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড় জানান, ইনকোয়েস্ট বলছে ১০টা ১০শে ইউডি রেজিস্টার্ড হয়৷ এই নন-মেডিক্যাল সহকারী সুপারিনটেনডেন্ট কে? তাঁর আচরণও খুব সন্দেহজনক, কেন তিনি এমন আচরণ করলেন?' প্রশ্ন বিচারপতির। সলিসিটার জেনারেল পাল্টা জানান, নির্যাতিতার বাবা জোর করায় এফআইআর করা হয়। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ অভিযোগ দায়ের করেননি৷ এরপর আরজি করের প্রাক্তন সুপার আখতার আলি যে সব দুর্নীতির অভিযোগ তুলেছিলেন সেই বিষয়ে সুপ্রিম কোর্ট অবগত করেন সলিসির জেনারেল।

এই বিভ্রান্তি দূর করতে তাই পরবর্তী শুনানির দিন পুলিশ আধিকারিককে আদালতে তলব করেন বিচারপতি পাদ্রিওয়ালা। যিনি এই ক্রম সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য সঠিক ভাবে আদালতকে জানাতে পারবেন, পরবর্তী শুনানির দিন তেমন কোনও আধিকারিককে আদালতে উপস্থিত রাখা হয়, কপিল সিব্বলকে এমনই নির্দেশ দেন তিনি। বিচারপতি বলেন, ‘‘আমার ৩০ বছরের জীবনে এমন কেস ডায়েরি দেখিনি৷’’

Comentarios

Obtuvo 0 de 5 estrellas.
Aún no hay calificaciones

Agrega una calificación

Top Stories

bottom of page