প্রয়াত বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য্য, আজ পূর্ণ দিবস সরকারী ছুটি ঘোষণা করল রাজ্য সরকার
কলকাতা, ৮ অগাস্ট, ২০২৪: বামফ্রন্ট আমলের শেষ মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য্যের জীবনাবসান। ২০০০ সাল থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত টানা ১১ বছর তিনি বাংলার মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৮০ বছর। আজ, বৃহস্পতিবার সকালে বুদ্ধদেবের মৃত্যুর খবর জানান তাঁর সন্তান সুচেতন ভট্টাচার্য। সকাল ৮টা ২০ মিনিটে পাম অ্যাভিনিউয়ের বাড়িতেই তিনি প্রয়াত হন। খবর পেয়ে সুচেতন সেখানে পৌঁছেছেন।
সূত্রের খবর, বুধবার রাতে বুদ্ধদেবের শ্বাসকষ্ট বাড়াবাড়ি পর্যায়ে গিয়েছিল। কিন্তু সেটা রাতে সামাল দেওয়া হয়েছিল। তখনই ঠিক করা হয়েছিল, বৃহস্পতিবার বেলা ১১টা নাগাদ উডল্যান্ডসের চিকিৎসকেরা এসে তাঁকে পরীক্ষা করবেন। প্রয়োজনে তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হবে। সকালে উঠে প্রাতরাশের পর চা-ও খেয়েছিলেন। তার পরে আবার অসুস্থ হয়ে পড়ায় তাঁকে নেবুলাইজ়ার দেওয়ার চেষ্টা হয়। সেই সময়েই তিনি হৃদ্রোগে আক্রান্ত হন। চিকিৎসকদের খবর দেওয়া হয় দ্রুত। তাঁরা এসে বুদ্ধদেবকে প্রয়াত বলে ঘোষণা করেন। দীর্ঘ দিন ধরেই গুরুতর শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যা (সিওপিডি)-তে ভুগছিলেন বুদ্ধদেব। অসুস্থতার কারণে শেষ কয়েক বছর কার্যত গৃহবন্দিই ছিলেন। আগেও একাধিক বার হাসপাতালে ভর্তি করাতে হয় তাঁকে।
রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের জীবনাবসানে শোকপ্রকাশ করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর খোঁজ রাখতেন। বুদ্ধবাবুর স্ত্রী মীরা ভট্টাচার্যের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। এই দুই রাজনীতিক বরাবর বিপরীত মেরুতে থেকেছেন, প্রতিপক্ষ হয়ে লড়াই করে গিয়েছেন। কিন্তু, ব্যক্তিগত স্তরে বরাবর সৌজন্য দেখিয়েছেন তাঁরা। রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় গান স্যালুট দিয়ে শেষকৃত্য সম্পন্ন হবে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর। এ দিন পূর্ণ দিবস সরকারি ছুটির ঘোষণা করেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী।
বুদ্ধবাবুর দেহ সংরক্ষণ করা হবে আজকে। সিপিআইএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম জানান, সিপিআইএম এর বহু নেতা, কর্মী, সমর্থকেরা সারাদেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে আসবে শেষবারের মত বুদ্ধবাবুকে দেখতে। দিল্লি এবং উত্তরবঙ্গ থেকে যাঁরা আসবেন তাঁরা রাতেই সফর করে পৌঁছবেন। তাঁদের জন্য সংরক্ষণ করা হবে ওঁর দেহ। তাই আজ দেহ পিস ওয়ার্ল্ডে রাখা হবে। কালকে সকাল ১০.৩০ থেকে আলিমুদ্দিন স্ট্রিট থাকবে তাঁর মরদেহ। বিকেলে ৪.০০ শেষযাত্রা শুরু হবে। তিনি আরও বলেন, চিকিৎসা শাস্ত্রের গবেষণার জন্য দেহ দান আগেই করেছিলেন তিনি। তাঁর শেষ ইচ্ছেপূরণ করা হবে। তবে, কোথায় দেহ দান করা হবে এখনও ঠিক হয়নি। কোথায় দেহ দান করা হবে তা ঠিক করতে স্বাস্থ্য দফতরের সঙ্গে কথা বলা হচ্ছে তবে সম্ভবত এনআরএস হাসপাতালে দেওয়া হবে বুদ্ধদেবের দেহ।। তার আগে বৃহস্পতিবারই বুদ্ধদেবের চক্ষুদান প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে।
Comments