যোগ্য ও অযোগ্য প্রার্থী বাছাই সম্ভব না হলে পুরো প্যানেল বাতিল হবে, জানাল সুপ্রিম কোর্ট
কলকাতা, ১৯ ডিসেম্বর, ২০২৪: অবশেষে বৃহস্পতিবার চাকরি বাতিল মামলার শুনানি হল সুপ্রিম কোর্টে। প্রধান বিচারপতির বেঞ্চে হওয়া এই শুনানিতে শীর্ষ আদালতের একাধিক প্রশ্নের মুখে পড়ে রাজ্য, এসএসসি। বৃহস্পতিবারের শুনানিতে সবথেকে গুরুত্ব দিয়ে যেটা দেখা হয়েছে সেটা হল যোগ্য ও অযোগ্যকে আলাদা করা সম্ভব কি না। বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্টে সকাল সাড়ে দশটা নাগাদ প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খন্নার বেঞ্চে শুরু হয় এই মামলার শুনানি। রাজ্যের হয়ে সওয়াল করেন আইনজীবী রাকেশ দ্বিবেদী।
বৈধ-অবৈধ চাকরি পৃথকীকরণ করা না গেলে পুরো প্যানেল নতুবা পরীক্ষা বাতিলের পথে হাঁটতে পারে আদালত, এমনটাই জানিয়ে দিলেন প্রধান বিচারপতি। প্রধান বিচারপতি বলেন, “যোগ্য-অযোগ্য বাছাই করা না-গেলে পুরো প্যানেল বাতিল করতে হবে।” তিনি বলেন, “নম্বরে কারচুপি হয়েছে। লিখিত পরীক্ষার নম্বর বৃদ্ধি করা হয়েছে।” তার পরেই তিনি রাজ্যের আইনজীবীর কাছে জানতে চান, যোগ্য এবং অযোগ্য চাকরিপ্রার্থীদের বাছাই করতে রাজ্যের সম্মতি রয়েছে কি না। রাজ্যের আইনজীবী জানান, যোগ্য এবং অযোগ্য বাছাইয়ে তাঁদের সমর্থন রয়েছে। এই মামলার পরবর্তী শুনানি হবে জানুয়ারি মাসে।এদিন প্রধান বিচারপতির তাৎপর্যপূর্ণ মন্তব্য হল, "ডাল মে কুছ কালা হ্যায়, ইয়া সব কুছ কালা হ্যায়"?
এ প্রসঙ্গে, বৈধ- অবৈধ চাকরি পৃথকীকরণ সম্ভব বলেই জানাল এসএসসি। হাইকোর্টের রিপোর্ট অনুযায়ী অবৈধ চাকরি প্রায় ৫ হাজার। অপরদিকে মূল মামলাকারীদের দাবি অবৈধ চাকরির সংখ্যা ৯ হাজারেরও বেশি। প্রসঙ্গত, এদিনের শুনানিতে কারচুপিতে চাকরিহারা প্রার্থীদের কথাও শুনলেন প্রধান বিচারপতি। মধ্যশিক্ষা পর্ষদের আইনজীবী জানান এখন তাঁরা চাকরির থেকেও বেশি চিন্তিত বাংলার শিক্ষাব্যবস্থা নিয়ে। কারণ এত মানুষের চাকরি একসঙ্গে চলে গেলে শিক্ষা পরিকাঠামো ভেঙে পড়তে পারে। বিপুল সংখ্যক শিক্ষকের চাকরি চলে গেলে স্কুল চালাতে গিয়ে শিক্ষা দফতর সমস্যায় পড়ে যাবে। এই প্রসঙ্গ তুলে ধরা হয়েছে শুনানিতে।
বৃহস্পতিবারের শুনানিতে ‘সুপারনিউমেরারি’ পোস্ট নিয়ে সুপ্রিম-প্রশ্নের মুখে পড়ে রাজ্য। যোগ্য এবং অযোগ্য চাকরি প্রাপকদের বাছাই করতে মেটা ডেটা খুঁজে বার করতে হবে বলে মন্তব্য করেন প্রধান বিচারপতি। এই প্রসঙ্গে তাঁর সংযোজন, “তা না হলে আমরা যোগ্য এবং অযোগ্য তালিকা বাছাই করতে পারব না।” একই সঙ্গে প্রধান বিচারপতি বলেন, “সঠিক বিষয় হল এসএসসি মিরর ইমেজ রাখেনি। আসল কপি নেই। প্রমাণ বলতে শুধুমাত্র স্ক্যান কপি রয়েছে। আবার তার সঙ্গে এসএসসির বসানো নম্বরের মিল নেই। এমনকি স্ক্যানিং-এ অনিয়ম করা হয়েছে।” প্রধান বিচারপতি বলেন, “অনেক কিছু গোপন করা হয়েছে। একটা জিনিস পরিষ্কার, আসল এবং স্ক্যান ওএমআর শিট এক নয়।” ৪ঘণ্টা ১০ মিনিটের বিচারপ্রক্রিয়া এদিন হয়েছে। তবে কোন পদ্ধতিতে এই বৈধ ও অবৈধ চাকরি প্রাপকদের আলাদা করা সম্ভব সেটা নিয়ে একটা প্রশ্ন থেকেই গিয়েছে।
コメント