top of page

লাইভ স্ট্রিমিং করতে দেওয়া যাবেনা, এই মর্মে বৃহস্পতিবারও ভেস্তে গেল আলোচনা। জুনিয়রদের পাশে সিনিয়র ডাক্তারেরা




কলকাতা, ১২ সেপ্টেম্বর, ২০২৪: আজও মিটল না সমস্যা। হলনা বৈঠক। তিন দিন ধরে নবান্নে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়ের সঙ্গে আন্দোলনকারী জুনিয়র চিকিৎসকদের বৈঠকের সম্ভাবনা তৈরি হলেও শেষ পর্যন্ত বৃহস্পতিবারও আলোচনা হল না। আন্দোলনরত চিকিৎসকদের প্রথমে রাজ্য জানিয়েছিল ১৫ জন প্রতিনিধিকে নিয়ে আসার কথা। পরে ৩০ জন প্রতিনিধি নিয়ে গেলেও চিকিৎসকদের ঢুকতে দেওয়া হয়। বলা হয়েছিল বিকেল ৫ টার মধ্যে নবান্নে ঢুকতে হবে। সেখানে চিকিৎসকদের নিয়ে বাস পৌঁছায় বিকেল ৫.২৩ মিনিটে। তাঁদের ৩০ জনের প্রতিনিধিকে নবান্নে প্রবেশ করতে দিলেও লাইভ স্ট্রিমিং এ রাজি নয় নবান্ন। এদিকে, ডাক্তাররা দাবি করেন, লাইভ স্ট্রিমিং না করলে তাঁরা বৈঠকে যোগ না দিয়ে ফিরে যাবেন। সেক্ষেত্রে দায় থাকবে রাজ্যের।

নবান্ন সভাঘরে ২ ঘণ্টা ১০ মিনিট অপেক্ষা করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়। নবান্নের দরজা পর্যন্ত এসেও বৈঠকের লাইভ সম্প্রচারের দাবি না মানায় ভিতরে ঢোকেননি আন্দোলনকারীরা। এই নাটকীয় টানাপোড়েনের পর সাংবাদিক সম্মেলন করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মুখ্যমন্ত্রীর দাবি, ৩ দিন তিনি আন্দোলনকারী জুনিয়র ডাক্তারদের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করেছেন। কিন্তু সুপ্রিম কোর্টের অধীনে থাকা বিচারাধীন বিষয়ের আলোচনা কখনওই লাইভে করা যায় না। হাত জোর করে মমতা বলেন, ‘আমি ক্ষমা চাইছি বাংলার মানুষের কাছে। আপনারা ভেবেছিলেন আজ মিটে যাবে। যারা নবান্নে এর গেটে এসেও এলেন না, তাঁদের ক্ষমা করে দিলাম।’ মমতা বলেন, ‘আমি পদত্যাগ করতে রাজি আছি। আমার চেয়ার চাই না। কিন্তু আমি চাই, তিলোত্তমা বিচার পাক। সাধারণ মানুষ চিকিৎসা পরিষেবা পাক।’

রাজ্য প্রশাসনের তরফে জুনিয়র ডাক্তারদের বলা হয়েছে, ফর্মাল মিটিং এ লাইভ স্ট্রিমিং হয় না, রাজ্যের ডিজি বলেন, যেটা পাবলিককে বলতে হয়, সেটা লাইভ স্ট্রিমিং হয়।

জুনিয়র ডাক্তারেরা সাংবাদিক সম্মেলনে বলেন, “মুখ্যমন্ত্রীর ডাকে সাড়া দিয়ে আমরা নবান্নে এসেছিলাম। পাঁচ দফা দাবি নিয়ে কথা বলতে এসেছিলাম। মুখ্যমন্ত্রী যেমন বলেছিলেন, তেমন খোলা মনেই কথা বলতে এসেছিলাম। জুনিয়র ডাক্তারদের বক্তব্য, “যাঁদের অপসারণের জন্য আমরা দাবি তুলেছি, সেই দাবির কি ন্যায়বিচারের সঙ্গে যোগাযোগ নেই? অবশ্যই যোগ আছে। এই মানুষগুলি যদি পদে বহাল থাকেন, তাহলে তদন্ত প্রক্রিয়া বিঘ্নিত হওয়ার যথেষ্ট সম্ভাবনা আছে। এই চেয়ার, এই ভবনের উপর আমাদের এখনও ভরসা আছে। তাই আমরা এখনও অপেক্ষা করছি।” তাঁরা বলেন, আমরা অবস্থান মঞ্চে ফিরে যাব। জানতে পারলাম নবান্নের দরজা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। যদি বন্ধ হয়ে যায়, আশা করি, দরজা আবার একদিন খুলবে। আমাদের অবস্থান চলবে।”

প্রসঙ্গত আজ, বৃহস্পতিবার বিকেল ৫টায় বৈঠকে বসতে চেয়ে মেল করা হয়েছিল মুখ্য সচিবের তরফে। এই বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় উপস্থিত থাকবেন বলেও জানানো হয়েছিল। ‘অভিভাবক’ হিসেবে মুখ্যমন্ত্রী বৈঠকে উপস্থিত থাকুন, এমনটাই চাইছিলেন ডাক্তাররা। এর পাশাপাশি, ৩০ জন প্রতিনিধিকে বৈঠকে থাকার অনুমতি দিতে হবে এবং বৈঠকটি লাইভ সম্প্রচার করতে হবে বলেও শর্ত দেওয়া হয়।

এদিকে আজ জুনিয়র ডাক্তারদের পাশে এসে দাঁড়ালেন সিনিয়র ডাক্তররাও। স্বাস্থ্যভবনের বাইরে ধরনা মঞ্চে সিনিয়র ডাক্তাররা কার্যত হুঁশিয়ারি দিয়ে গেলেন, “যদি জুনিয়র ডাক্তারদের ওপর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেমে আসে, তাহলে আমরা বাধ্য হব কর্মবিরতির মতো কোনও বড় পদক্ষেপ গ্রহণ করতে।” তাঁরা বললেন, "অবিলম্বে জুনিয়র ডাক্তারদের সঙ্গে বৈঠক করার ব্যাপারে মুখ্যমন্ত্রীর সদর্থক ভূমিকা পালন করা প্রয়োজন। আমরা সিনিয়র চিকিৎসকরা জুনিয়র চিকিৎসকদের আন্দোলনের পাশে সর্বদাই আছি।"

Comments

Rated 0 out of 5 stars.
No ratings yet

Add a rating

Top Stories

bottom of page