top of page

সুপ্রিম শুনানিতে সন্তুষ্ট জুনিয়র ডাক্তারেরা, জিবি মিটিং এর পর কাজে যোগ দেওয়া নিয়ে সিদ্ধান্ত




কলকাতা, ১৭ সেপ্টেম্বর, ২০২৪: রাতে মহিলাদের কর্মস্থল সংক্রান্ত ‘বিতর্কিত’ বিজ্ঞপ্তি মুছে ফেলতে হচ্ছে রাজ্য সরকারকে। ‘বিতর্কিত’ ওই বিজ্ঞপ্তির গ্রহণযোগ্যতা নিয়েই এ বার প্রশ্ন তুলে দিলেন সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়। কড়া প্রশ্নের মুখে পড়তে হল রাজ্যকে। কী ভাবে এই বিজ্ঞপ্তি জারি করল রাজ্য, জানতে চাইলেন প্রধান বিচারপতি।

আজ আরজি কর-কাণ্ডে তদন্তের অগ্রগতি নিয়ে মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্টে ফের ‘স্টেটাস রিপোর্ট’ জমা দিল সিবিআই। রিপোর্ট দেখে তিন বিচারপতি জানালেন, কেন্দ্রীয় তদন্তকারী দলের রিপোর্ট দেখে তাঁরা ‘বিচলিত’। মঙ্গলবার চন্দ্রচূড় বলেন, ‘‘সিবিআই রিপোর্টে যা লিখেছে, তা খুবই উদ্বেগের।’’ প্রধান বিচারপতি চন্দ্রচূড় বলেন, “সিবিআই ঘুমিয়ে নেই। তারা তদন্ত করছে। তদন্ত খুবই গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় রয়েছে।” তদন্ত শেষ না হওয়া অবধি রিপোর্ট প্রকাশ্যে না আনার নির্দেশ দিল বেঞ্চ। সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছে, আরজি কর হাসপাতালে ধর্ষণ এবং খুনের ঘটনার দিন ঘটনাস্থলে কারা উপস্থিত ছিলেন, সেই সব নাম জমা দিতে হবে জুনিয়র ডাক্তারদের। নির্যাতিতার বাবা যে সব বিষয় নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন, খতিয়ে দেখতে হবে তা-ও।

এদিকে সুপ্রিম কোর্টে চতুর্থ শুনানি ‘সন্তোষজনক’, বলেছেন ডাক্তারেরা। জুনিয়র চিকিৎসকদের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, জিবি বৈঠকের তারিখের ওপর কর্মবিরতি প্রত্যাহারের দিনক্ষণ নির্দিষ্ট হবে। রাজ্য আদালতে জানিয়েছে, রাজ্যের সব হাসপাতালে ডাক্তারদের জন্য শৌচাগার, বিশ্রাম কক্ষ, সিসি ক্যামেরা লাগানো হবে। চিকিৎসকদের ডিউটি রুমে নিরাপত্তা দেওয়ার কথাও জানানো হয়েছে। এগুলি নিশ্চিত করেই কাজে যোগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেবেন জুনিয়র ডাক্তারেরা।

অপরদিকে গতকাল মুখ্যমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতিমতো কলকাতার নতুন পুলিশ কমিশনার করা হল মনোজ বর্মাকে। তিনি ১৯৯৮ ব্যাচের আইপিএস অফিসার। মনোজ রাজ্য পুলিশের এডিজি (আইনশৃঙ্খলা) পদে নিযুক্ত ছিলেন। এর আগে তিনি কলকাতা পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনারের দায়িত্ব সামলেছেন। একই সঙ্গে কলকাতা এবং রাজ্য পুলিশের একাধিক পদে বদল আনা হয়েছে। কলকাতার সদ্যপ্রাক্তন পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েলকে পাঠানো হয়েছে এডিজি (এসটিএফ) পদে। কলকাতা পুলিশের ডিসি (উত্তর) অভিষেক গুপ্তকে সরিয়ে পাঠানো হয়েছে ইএফআরের সেকেন্ড ব্যাটালিয়নের কমান্ডিং অফিসার পদে। অভিষেকের জায়গায় নিয়ে আসা হয়েছে দীপক সরকারকে। তিনি শিলিগুড়ি পুলিশ কমিশনারেটের ডিসি (পূর্ব) ছিলেন। পাশাপাশি জুনিয়র ডাক্তারদের আরও একটি দাবি কার্যকর করল রাজ্য। সরিয়ে দেওয়া হল রাজ্যের স্বাস্থ্য অধিকর্তা (ডিএইচএস) কৌস্তভ নায়েক এবং স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিকর্তা (ডিএমই) দেবাশিস হালদারকে। স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিকর্তা পদে থাকা দেবাশিসকে বদলি করা হচ্ছে জনস্বাস্থ্যের স্পেশ্যাল অফিসার অন ডিউটি পদে। স্বাস্থ্য অধিকর্তার পদে থাকা কৌস্তভ নায়েক ইনস্টিটিউট অফ হেল্‌থ এবং‌ ফ্যামিলি ওয়েলফেয়ার ইনস্টিটিউটের অধিকর্তা হচ্ছেন। রাজ্যের নতুন স্বাস্থ্য অধিকর্তা হচ্ছেন স্বপন সোরেন।

এ দিন, আবাসিক ডাক্তারদের জন্য একটি অনুকূল এবং নিরাপদ কাজের পরিবেশের প্রয়োজনীয়তার উপর জোর দিয়েছেন চন্দ্রচূড়। বিশেষ জোর মহিলা চিকিৎসকদের নিরাপত্তায়। সুপ্রিম কোর্ট নির্দেশ দিল-


১) ২৮টা মেডিক্যাল কলেজের মহিলা ডাক্তারের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। না হলে এই নতুন নিরাপত্তাকর্মীদের নিয়ে নতুন করে আশঙ্কা তৈরি হবে চিকিৎসকদের মধ্যে।


২) অননুমোদিত চলাচল নিয়ন্ত্রণ করার জন্য সেমিনার রুম, ওয়াশরুম, ডাক্তারের কক্ষের মতো সমস্ত অ্যাক্সেসের জায়গায় বায়োমেট্রিক সিস্টেম ইনস্টল করতে হবে- এটি সর্বজনীন করা উচিত।


৩) ৪৫টা হাসপাতালে পুলিশের নিরাপত্তা দিতে হবে। কারণ, সেখানে ১৮-১৯ বছরের মেয়েরা পড়তে আসছেন। তাঁরা সদ্য বাড়ি ছেড়ে কলেজে পড়তে আসছেন। তাঁদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।


৪) পশ্চিমবঙ্গ সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কোনও চুক্তিভিত্তিক নিরাপত্তাকর্মীকে মোতায়েন করা যাবেনা। শুধুমাত্র নিয়মিত পুলিশ কর্মী, বিশেষ করে মহিলা কর্মীদের মোতায়েন করতে হবে।


মঙ্গলবার বিশ্বকর্মা পুজো। আচমকাই দুপুরে ধর্নাস্থলে বেজে উঠল ঢাক, উলুধ্বনি। অন্যান্য বাজনাও বাজাচ্ছেন আন্দোলনকারীরা। নানা ধরনের স্লোগান উঠছে। একেবারে সাধারণ মানুষরা এসেছেন। একাধিক মহিলা বলেন, লক্ষ্মীর ভাণ্ডার ছাড়তেও রাজি। তবু প্রতিবাদ ছাড়ব না। ধর্নাস্থলের চারপাশের দেওয়ালে স্লোগান লেখা। রাস্তায় লেখা স্লোগান। বেসরকারি বিল্ডিংয়ের দেওয়ালে স্লোগান। এই বিশ্বকর্মা পুজো মনে রাখবে কলকাতা।

Comments

Rated 0 out of 5 stars.
No ratings yet

Add a rating

Top Stories

bottom of page