top of page

সংসদে ওয়াকফ বোর্ড সংশোধনী বিল পেশ




২ এপ্রিল, ২০২৫: লোকসভায় ওয়াকফ বোর্ড সংশোধনী বিল পেশ। পাশাপাশি সংসদে এটি নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে। শাসক এবং বিরোধী উভয় পক্ষই নিজেদের যুক্তি উপস্থাপন করেছেন। তুমুল তরজা চলছে সংসদে। তবে সব ঠিক থাকলে বিলটি পাশ হতেও বিশেষ বেগ পেতে হবে না মোদি সরকারকে।

উল্লেখ্য, ইসলাম ধর্মাবলম্বীরা যে সম্পত্তি ধর্মপ্রচার এবং সমাজের উন্নতিকল্পে দান করেন, সেটাকে ওয়াকফ বলে। এই ওয়াকফ সম্পত্তি বিক্রি করা যায় না বা ব্যবসায়ীক স্বার্থে ব্যবহার করা যায় না। ইসলাম ধর্মাবলম্বীরা মনে করেন, ওয়াকফ আসলে ঈশ্বরের সম্পত্তি। ওয়াকফ সম্পত্তি রক্ষা করার জন্য আলাদা বোর্ড বা কমিটি গড়ার ধারণা ভারতে শুরু হয় সেই সুলতানি আমল থেকে। এই বোর্ডের মূল কাজ ওয়াকফ সম্পত্তির রক্ষণাবেক্ষণ এবং নিয়ন্ত্রণ করা। স্বাধীন ভারতে ১৯৫৪ সালে পাশ হয় ওয়াকফ আইন। ১৯৯৫ সালে ওয়াকফ আইন সংশোধন করে, ওয়াকফ বোর্ডকে সর্বোচ্চ ক্ষমতা দেওয়া হয়েছিল। এই মুহূর্তে রেল এবং ভারতীয় সেনার পর দেশে সবচেয়ে বেশি সম্পত্তি রয়েছে ওয়াকফ বোর্ডেরই।

বর্তমান ওয়াকফ বিলের ৪০ নম্বর ধারা আইন অনুযায়ী, ওয়াকফ বোর্ডের দখল করা সম্পত্তি বা জমিতে সরকারি পর্যালোচনা ছাড়াই ওয়াকফ বোর্ড জমি দখল করতে পারে। কোনও সম্পত্তি নিয়ে ব্যক্তিগত মালিকানা এবং ওয়াকফ বোর্ডের আইনি বিবাদ চললেও তাতে হস্তক্ষেপ করতে পারে না সরকার। নতুন সংশোধনীতে ওয়াকফ বোর্ডের সেই একচ্ছত্র অধিকার কেড়ে নিয়ে কোনও সম্পত্তি ওয়াকফ কি না, সেই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা দেওয়া হবে জেলাশাসক বা সমপদমর্যাদার কোনও আধিকারিকের হাতে। পুরনো আইন অনুযায়ী কোনও সম্পত্তিকে ওয়াকফ সম্পত্তি ঘোষণা করলে, চিরদিনের জন্য সেটি ওয়াকফ সম্পত্তি হিসাবেই থেকে যেত। নতুন বিল পাশ হলে এবার সেটাকেও চ্যালেঞ্জ করা যাবে। ফলে যে সম্পত্তি ওয়াকফ বোর্ডের বলে ঘোষণা করে, তাতে ইসলামিক ধর্মস্থান বা অন্য কোনও ইসলামিক প্রার্থনাস্থল তৈরি হলেও সেটাকে ব্যক্তিগত সম্পত্তি বলে দাবি করা যেতে পারে।

সংখ্যালঘুদের একাংশের ধারণা, এই বিল পাশ হয়ে গেলে ইসলামিক সম্পত্তি সরকার হস্তগত করবে সরকার। বিরোধীদের যুক্তি, এই বিল ধর্মনিরপেক্ষ ভারতের স্বত্ত্বায় আঘাত। ওয়াকফ সংশোধনী বিলের ২টি সেকশনে স্পষ্ট বলা হয়েছে, সেন্ট্রাল ওয়াকফ কাউন্সিল এবং রাজ্য ওয়াকফ বোর্ডে অমুসলিম সদস্যকে রাখা হতে পারে। যার প্রবল বিরোধিতা করেছে দেশের প্রায় সবকটি বিরোধী দল। যদিও এ দিন বক্তব্য রাখতে গিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, সেন্ট্রাল ওয়াকফ কাউন্সিল এবং রাজ্য ওয়াকফ বোর্ডে কোনও অমুসলিম সদস্য জায়গা পাবেন না। অমিত শাহের অভিযোগ, বিরোধীরা মুসলমান সম্প্রদায়ের নাগরিকদের ভুল বোঝাতে এবং তাঁদের মনে ভয় ধরাতেই মিথ্যাচার করছে। যদিও ওয়াকফ সংশোধনী বিল ২০২৪-এ ৯ ও ১১ নম্বর সেকশনে স্পষ্ট বলা রয়েছে, সেন্ট্রাল ওয়াকফ কাউন্সিল ও রাজ্য ওয়াকফ বোর্ডে অমুসলিম সদস্য থাকবেন।

বিরোধীদের প্রবল বিরোধিতার মধ্যে এদিন দুপুর ১২টা নাগাদ ‘দ্য ওয়াকফ সংশোধনী বিল ২০২৫’ এবং ‘দ্য মুসলমান ওয়াকফ (রিপিল) বিল ২০২৪’ সংসদের নিম্নকক্ষে পেশ করেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী কিরেণ রিজিজু। বিরোধীদের প্রবল চাপের মুখে বিতর্কিত ওয়াকফ বিলের উপরে এদিন আট ঘণ্টা আলোচনায় রাজি হয়েছে সরকার। এর পরে হবে ভোটাভুটি। সংখ্যার জোরে এই বিল পাশ করিয়ে নিতে চাইছে কেন্দ্র।

 
 
 

Comentários

Avaliado com 0 de 5 estrelas.
Ainda sem avaliações

Adicione uma avaliação

Top Stories

প্রতিদিনের খবর এবং বিভিন্ন ফিচার ভিত্তিক লেখা, যেখানে খবরের সত্যতা তথা লেখনীর উৎকৃষ্টতা প্রাধান্য পায়। ফিচার ছাড়াও যে কোনও রকম লেখনী শুধুমাত্র উৎকৃষ্টতার নিরিখে গুরুত্ব পাবে এই সাইটে

Thanks for subscribing!

  • Whatsapp
  • Youtube
  • Instagram
  • Facebook
  • Twitter

The Conveyor

bottom of page